সরকার হটানো পর্যন্ত আন্দোলন চলবে- খালেদা

জালেম ও দুর্নীতিবাজ’ সরকারকে বিদায় না করা পর্যন্ত আন্দোলনের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া।

তিনি বলেছেন, সরকার নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের বিল সংসদে পাস না করলে কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।

খালেদা জিয়ার ভাষায়, “সাপকে বিশ্বাস করা যায়, আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করা যায় না।এজন্য আমরা আজ গণসংযোগে নেমেছি। মা-বোনসহ দেশের মানুষকে জেগে উঠতে হবে।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজধানীতে দিনকব্যাপী গণসংযোগের অংশ হিসাবে গাবতলীতে প্রথম পথসভায় এ কথা বলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।

বেলা সোয়া ১১টার দিকে তিনি গাবতলীর হানিফ পরিবহন বাস ডিপো (পুরনো বিউটি সিনেমা হল) প্রাঙ্গণের মঞ্চে পৌঁছালে নেতা-কর্মী-সমর্থকরা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানায়।

হালকা ঘিয়ে রঙের শাড়ির ওপর শাল পরিহিত খালেদা জিয়া হাত নেড়ে তাদের অভিনন্দনের জবাব দেন।

নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিতে এই গণসংযোগ হলেও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বিচার বিভাগ দলীয়করণের প্রতিবাদ এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিও যুক্ত হয়েছে এর সঙ্গে।

খালেদা জিয়ার পথসভা উপলক্ষে সকাল থেকেই মিরপুর, আমিনবাজার, কাফরুলসহ আশপাশের এলাকা থেকে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা গাবতলীতে জড়ো হন।

৪০ মিনিটের বক্তব্যে খালেদা জিয়া দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন।

তিনি বলেন, “এই জালেম, দুর্নীতিবাজ সরকারকে বিদায় করতে হবে। এদের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলনের কর্মসূচি বন্ধ হবে না। ১৮ দলীয় জোটের সভা করে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি দেব।”

বর্তমান সরকারের আমকলে দেশে ‘জংলি শাসন’ চলছে বলেও মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমাদের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিন। নইলে জনগণ রাস্তায় নামবে, তখন আপনারা পালাবার পথ পাবেন না।”

তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমরা এই সরকারের আমলে কোনো চাকরি পাওনি। তোমাদের নেশা খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখে তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাই তোমাদের আজ জেগে উঠতে হবে।আমরা তোমাদের জন্য আজ রাস্তায় নেমেছি।”

যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গেও এই পথসভায় কথা বলেন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, বিরোধী দল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর জন্য আন্দোলন করছে বলে যে অভিযোগ সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়- তা সত্য নয়।

“জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তারা এসব বলছে। আমরা সরকারের দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আন্দোলনে নেমেছি।”

ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের যে সাড়ে ৭ হাজার মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পুনঃতদন্ত করে সেগুলোর বিচার করার ঘোষণা দেন দলের চেয়ারপার্সন।

সাবেক সাংসদ ও মহানগর যুগ্ম আহবায়ক এস এ খালেকের সভাপতিত্বে পথসভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল মান্নান, বরকত উল্লাহ বুলু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, জামায়াতে ইসলামীর মজিবুর রহমান, সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, নুরুল ইসলাম বুলবুল, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধানসহ ১৮ দলীয় জোট নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

গাবতলীর পথসভা শেষে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর কারওয়ান বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারে প্রগতি টাওয়ারের সামনে পথসভার পর যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়ক, সবুজবাগের বাসাবো বালুর মাঠ ও বাড্ডার ভাটারা মাঠে পথসভা করবেন খালেদা জিয়া।
Flag Counter
পাঠকের সবধরনের মত তুলে ধরতে চাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ । যে কোন বিষয় নিয়ে আপনিও লিখুন আর পাঠিয়ে দিন আমাদের কাছে. সাথে আপনার যোগাযোগের ঠিকানা ,আপনার একটি ছবি পাঠাতে ভুলবেন না।আপনার লেখা বা ছবি আমাদের ইমেল করুন chapainawabganjnews@yahoo.com