কহিনুর বেগমও আসামী!

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নে মঙ্গলবার আওয়ামীলীগ কর্মী মোহাম্মদ চুটুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছিল বিএনপি কর্মী ও মামলার আসামী তরিকুল ইসলামসহ ৪/৫ জন সন্ত্রাসী। বেলা ১১ টার দিকে ঘটে এই ঘটনা। তারপরর খবর পেয়ে আওয়ামীলীগ কর্মীরা দুপুরে একে একে জ্বালিয়ে দেয় তরিকুলের বাড়ীসহ বিএনপি’র প্রায় ১৫ নেতা কর্মীরা বাড়ি। ওই সময় তরিকুলের বাড়ী থেকে হামলাকারীদের হাতে অবরম্নদ্ধ হয় তার স্ত্রী কহিনুর বেগম। সেই কহিনুর চুটু’র উপর হামলার আসামী। বুধবার তাকে পাঠানো হয়েছে জেল হাজতে।
স'ানীয় সূত্র গুলো জানায়, মানবতা বিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর পরই চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের কানসাট পলস্নী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অগ্নি সংযোগ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাসহ আওয়ামীলীগের পড়্গের কয়েকটি মামলার স্বাড়্গী মোহাম্মদ চুটু আলী টিকরী বাজার এলাকার আম বাগানে কীটনাশক দিতে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়। ওই সব মামলার আসমী বিএনপি কর্মী তরিকুল ইসলাম ৪/৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে তাকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। কোপানোর পর চুটু মারাগেছে এমনটা মনে করে তাকে ফেলে চলে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে স'ানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ স্বাস'্য কমপেস্নক্সে ভর্তি করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামীলীগ কর্মীরা সংগবদ্ধ হয়ে শুরম্ন করে তা-বলীলা। তারা মোবারকপুর, দানিয়ালপুর, গঙ্গরামপুর এলাকায় তারা একে একে আগুন লাগিয়ে দেয় বিএনপি’র ফজলুর রহমান, রম্নবেল আলী, আব্দুস সালাম, গোলাম মোসত্মফা, তরিকুলসহ ১৫ নেতা কর্মীর বাড়িতে। এ সময় তারা ব্যাপক ভাঙ্গচুরও করে। একই সময় ভাঙ্গচুর হয় দুটি দোকানও। ওই সূত্র জানায়, তরিকুলের বাড়িতে ভাঙ্গচুর ও অগ্নি সংযোগের সময় হামলাকারীরা তরিকুলের স্ত্রী কহিনুর বেগম তার দুই সনত্মানকে ধরে নিয়ে যায়। দুই সনত্মানকে ছেড়ে দিলেও কহিনুরকে টিকরী বাজারের বুদ্ধার চা মিষ্টির দোকানে অবরম্নদ্ধ করে রাখে প্রায় ২ ঘণ্টা। অভিযোগ করা হয়েছে, এ সময় তাকে নির্যাতনও করা হয়। ২ ঘন্টা পর তাকে পুলিশ উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে তাকে উদ্ধার করার বিষয়টি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘ তাকে (কহিনুরকে) উদ্ধার করা না হলে বড় ধরণে অঘটন ঘটতো’। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার মূখে মোবারকপুরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করার পর রাতে কহিনুর বেগমকে নিয়ে আসা হয় শিবগঞ্জ থানায়। ওই রাতেই দায়ের হওয়া মামলায় তাকে আসামী করা হয়।
শিবগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক ইব্রাহিম জানান, মোবারকপুরের সন্ত্রাসী হামলা, অগ্নি সংযোগ ও ভাঙ্গচুরের ঘটনায় মাত্র একটি মামলা হয়েছে। মোবারকপুরের ফিটু আলী বাদি হয়ে মোট ১৫ জনকে আসামী করে যে মামলা দায়ের করেছেন সেই মামলার ২ নম্বর আসামী কহিনুর বেগম। তিনি জানান, দায়ের হওয়া মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, পূর্ব শত্রম্নতার জের ধরে চুটু’্‌র উপর হামলা করে আসামীরা। উপ পরিদর্শক ইব্রাহিম বলেন, ‘যেহেতু এজাহার নামীয় আসামী তাই তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে’। শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘মারামারির (হামলার) ঘটনার সঙ্গেও সে ( কহিনুর) জড়িত ছিল। ওই সময় তাকে স'ানীয় লোকজন ধরে পুলিশে সোপার্দ করে’। মঙ্গলবার পরিসি'তি নিয়ন্ত্রণ করতে মোবারকপুরে যাওয়া শিবগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক দীপক কুমার বলেন, ‘ টিকরী বাজারে চৌকিদার ও স'ানীয় লোকজন কহিনুরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়’।
এদিকে, মোবারকপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি তোহুর আহমেদ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপি কর্মীরা নিজেরাই তাদের বাড়ীতে আগুন লাগিয়ে আওয়ামীলীগের ঘাড়ে দোষচাপানোর চেষ্টা করেছে। তরিকুলের স্ত্রীকেও তারাই লুকিয়ে রেখেছিল’। স'ানীয় যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম বলেন, ‘আওয়ামীলীগ কর্মী চুটু শিবগঞ্জের কানসাট পলস্নী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাঙ্গচুর মামলার স্বাড়্গী হওয়ায় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিএনপি’র তরিকুলের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়’। অন্যদিকে শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম রশিদ বলেন, ‘পুলিশের সামনেই আওয়ামীলীগ কর্মীরা তা-বলীলা চালিয়ে অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট করেছে। বিএনপি কর্মীদেও গ্রামছাড়া করতেই এই অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে’। তিনি বলেন, ‘বিএনপি কর্মীদের উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে স'ানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা।  সব মামলায় আওয়ামীলীগের নিজস্ব লোককে স্বাক্ষী করে বিএনপি কর্মীদের আসামী বানিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে এমনকি হয়রানী করার জন্যই কহিনুরকেও আসামী করা হয়েছে’।
Flag Counter
পাঠকের সবধরনের মত তুলে ধরতে চাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ । যে কোন বিষয় নিয়ে আপনিও লিখুন আর পাঠিয়ে দিন আমাদের কাছে. সাথে আপনার যোগাযোগের ঠিকানা ,আপনার একটি ছবি পাঠাতে ভুলবেন না।আপনার লেখা বা ছবি আমাদের ইমেল করুন chapainawabganjnews@yahoo.com