‘আমি আবার বলছি আমি খারাপ নয়, তাই জীবন নিয়ে চলে যাচ্ছি’

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমসত্মাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের চর উদয়নগর গ্রামের এনামুল হকের কলেজ পড়-য়া কন্যা’র জীবনের স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষে ভাল চাকরী করবে। দরিদ্র পিতার সাধ সাধ্যের অমিলের কারণে একই এলাকার নানা নানির বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করতো ওই ছাত্রীটি। একই সঙ্গে একটি প্রতিবন্ধি স্কুলে শিড়্গকতা। প্রতিবন্ধি শিশুদের লেখাপড়া করাবে। শিড়্গিত করে তাদের নিয়ে আসবে সমাজের মূল শ্রোতে। কিন' তার আশা পুরণ হলো না। বখাটেদের শস্নীলতাহানির চেষ্টার অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে ওই ছাত্রীটি।
গোমসত্মাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ আহম্মেদ জানিয়েছেন, বুধবার রাতে ওই ছাত্রীটি উদয়নগর গ্রামের এক প্রতিবেশির বাড়িতে চার্জে দেয়া মোবাইল ফোন আনতে যায়। মোবাইল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে গোমসত্মাপুর উপজেলার ভেড়িবাজার এলাকার দুখু ও কাঠালবাজার এলাকার মামুন ছাত্রীটির পথরোধ করে। এ সময় অনেক কাকুতি মিনতি শেষে দৌড় দিয়ে পালিয়ে চিৎকার শুরম্ন করলে স'ানীয়া ছুটে আসে এবং দুখুকে ধরে ফেলে।
স'ানীয়রা জানায়, এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই চৌডালা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ওবায়দুর রহমান জর্জ এর বাড়িতে গ্রাম্য শালিস বসে। এতে দুখু ও মামুন ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে। প্রেড়্গিতে শালিস, দুখু ও মামুনকে চার হাজার টাকা জরিমানা ও বেত্রাঘাত করে। শস্নীলতাহানির চেষ্টার অপমান সইতে না পেরে ওই ছাত্রীটি পরের দিন বৃহস্পতিবার বাড়ির পার্শ্ববর্তী বাগানের আমগাছে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ আমবাগান থেকে ঝুলনত্ম ওই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে। একই সময় উদ্ধার করা হয়, ওই ছাত্রীর লেখা একটি চিরকুট। তাতেই ফুটে উঠেছে বখাটেদের বর্বরতা ও ওই ছাত্রীর স্বপ্নভঙ্গেও করম্নন চিত্র।
‘আমি প্রতিবন্ধি স্কুলে শিড়্গকতা করতাম। প্রতিবন্ধি ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাবো বলে। আমার নানা নানীকে ভালবাসি। তাই নানা নানীর এখানে চলে আসি। আমি ভাল চাকরী করবো বলে। কিন' আশা পূরণ হলো না’0।  প্রতিবেশীর বাড়িতে চার্জে দেয়া মোবাইল ফোন নিয়ে ফেরার সময় বখাটেদের নিষ্টুর আচরণের কথাও বলা হয়েছে ওই চিরকুটে। হাজারো কাকুতি মিনতি কাজে আসেনি। ওই চিরকুটে বলা আছে, ‘ কাকা আমি আপনাকে চিনি। আমাকে ছেড়ে দেন। আমার বাবার কসম, আমার ভাইয়ের কসম। আমি খারাপ নয়, আমাকে ছেড়ে দিন’ৃ। চিরকুটের শেষ উক্তি ‘আমি আবারও বলছি খারাপ নয়, তাই চিরকালের মত চলে যাচ্ছি। আপনারা আমাকে ড়্গমা করবেন’।
এদিকে ওই ছাত্রীর পিতা এনামুল হক বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে গোমসত্মাপুর থানায় ৯ জনের নামসহ ১৪ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে আত্মহত্যা করা ওই ছাত্রীর ময়না তদনত্ম সম্পন্ন হয়েছে।
ওসি ফিরোজ আহম্মেদ ঘটনাটিকে নির্মম উলেস্নখ করে বলেন, ‘ মামলা দায়েরের পর পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা একজনকে গ্রেফতার করেছি। বাকীদেরও গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে’।

Flag Counter
পাঠকের সবধরনের মত তুলে ধরতে চাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ । যে কোন বিষয় নিয়ে আপনিও লিখুন আর পাঠিয়ে দিন আমাদের কাছে. সাথে আপনার যোগাযোগের ঠিকানা ,আপনার একটি ছবি পাঠাতে ভুলবেন না।আপনার লেখা বা ছবি আমাদের ইমেল করুন chapainawabganjnews@yahoo.com