মোঃ মাহ্ফুজুর রহমান, রাজশাহী ঃ রাজশাহীর চারঘাটে রবিবার নববর্ষ উৎসবের দিনে বেড়াতে গিয়ে নৌকা ডুবিতে একই পরিবারের ২ জন সহ ৩ জনের লাশ পদ্মা নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে। নিহতরা হলো- চারঘাট সরদহ ডিগ্রী কলেজের কর্মচারী মোঃ আমিনুল ইসলামের মেয়ে সরদহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী আইভি আক্তার মুক্তি(১২) ও তার ভাই সরদহ মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্র আশিফ হোসেন(৮) এবং গৌড়শহর পুর গ্রামের মৃত এছার উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম(৪৫)। মোক্তারপুর ট্রাফিক মোড়ের তোজাম্মেল হোসেনের তরিনুজ্জামান তুর্জ নামের ৭ বছরের ছেলে বর্তমানে নিখোঁজ রয়েছে। উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। রাতভর রাজশাহী থেকে ডুবুরীরা এসে নদীতে উদ্ধার অভিযান চালিয়েও কোন লাশ উদ্ধার করতে পারেনী। গতকাল সোমবার ৯টার দিকে নুরুল ইসলাম নুরু নামের স্থানীয় ডুবুরী মোক্তারপুর পদ্মানদীতে থেকে ৩ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে । ঘটনা স্থানে সড়েজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিন জন নিহত হওয়ায় এলাকায় যেন শোকের মাতন শুরু হয়েছে। চারিদিকে শুধু কান্নার শব্দ। নিহতের স্বজনদের কান্নায় আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে গেছে। পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে কোন মতে প্রানে বেঁেচ আসা ইউসুফপুর কৃষি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী মোসাঃ সোহানা খাতুন জানায়, রবিবার নববর্ষের উৎসব পালনের জন্য অন্যান্যদের সাথে আমিও চারঘাট উপজেলার রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের সামনে নিরিবিলি পিকন্কি স্পটে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে বিকেলে পদ্মা নদীতে ভাড়া নৌকাতে অন্যান্যদের সাথে আমরাও নৌকায় চরে ঘুরতে যায়। ফেরার পথে আমাদের নৌকায় আরো কয়েকজন উঠে পড়লে নৌকা ডুবতে থাকে এ সময় নৌকার মাঝি লাফ দেয় নদীতে তারপরেই নৌকা ডুবে যায়। আমি কোন রকমে সাতার দিয়ে প্রানে বেঁেচ আসতে পেরেছি আরো ও অনেকে সাতার দিয়ে নদীর কিনারে গিয়ে প্রান রা পায়। অপর যাত্রী ও নিখোঁজ হওয়া তরিনুজ্জামান তুর্জর মা মোসাঃ বিলকিস বেগম জানান,’’ নববর্ষ উৎসব পালনের জন্য ছেলে মেয়ে নিয়ে বেড়াতে যায়। নৌকা ঢুবিতে আমার ৮ মাসের মেয়ে মায়াকে কোলে রেখে কোন রকমে সাতরিয়ে প্রান রা করলেও অপর ছেলে এখনও নিখোঁজ রয়েছে। ঘটনা স্থল চারঘাট মডেল থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক খান সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপরে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা পরির্দশন করেন। নৌকা ঢুবির ঘটনায় নিহত স্বজনদের সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন চারঘাট-বাঘার সাংসদ শাহরিয়ার আলম, সাবেক সাংসদ রায়হানুল হক রায়হান, পৌর মেয়র নার্গিছ খাতুন, উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক ফকরুল ইসলাম সহ স্থানীয় জনতা। নিহতদের জানাযা শেষে মোক্তারপুর গোরোস্থানে দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে চারঘাট মডেল থানায় অফিসার ইনর্চাজ ওসি আব্দুর রাজ্জাক খান জানান,’’ নববর্ষের আনান্দের দিনে নৌকা ডুবার ঘটনায় ৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনা দুঃখ জনক।