বিএনপি এমপি পাপিয়া’র হুমকী @ জিয়া হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা হবে

বিএনপির মহিলা সংসদ সদস্য ও নবগঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া এবার বিএনপি ক্ষমতায় আসলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যামামলা
দায়ের করার হুমকী দিয়েছেন। সোমবার বিকেলে দীর্ঘদিন পর জেলা বিএনপির গঠিত নতুন কমিটির প্রথম আয়োজন পৌর পার্কের জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জড়িত। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে এই হত্যাকাণ্ডের হকুমদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তিনি বলেন খালেদা জিয়াকে মইনুল হোসেন রোডের বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করে যারা তৃপ্তি হাসি হাসছেন তাদের উচ্ছাস বেশিদিন থাকবেনা।  একইভাবে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িও দখরদারদের কবল থেকে মুক্ত করা হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় আশিফা আশরাফী পাপিয়া বলেন, মহাজোট সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ সরকার এদের হাত থেকে দেশ বাঁচাতে এখন মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। নারীনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারীনীতি বাস্তবায়ন করতে হলে বিরোধী দলের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। স্থানীয় রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতা সর্ম্পকে পাপিয়া তার বক্তব্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ, সাবেক এমপি জামায়াত নেতা লতিফুর রহমন, পৌর সভার সাবেক মেয়র আতাউর রহমানের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি লতিফুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা জালাল হত্যাকারী উল্লেখ করে বলেন, আগামীতে জালাল হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে।  তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবনির্মিত ষ্টেডিয়ামের নাম ফলক থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাম ফেলে দেয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং নাম ফলকে খালেদা জিয়ার নাম প্রতিস্থাপনের দাবি জানান।
জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, 'বিএনপি’র এই জনসভা নিয়ে ক্ষমতাসীনরা কোন অশুভ ষড়যন্ত্র করে কিনা, ১৪৪ ধারা জারি করে কিনা তা নিয়ে শংকায় ছিলাম'। তিনি বলেন, প্রশাসন বুঝতে পেরেছে, জনরায় কোন দিকে তাই তারা প্রশাসনকে ব্যবহার করতে পারেনি। জাতীয় ইস্যুতে হারুন বলেন, দেশ আজ কঠিন সময় পার করছে। দেশের জাতীয়তাবাদ, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নিরাপত্তা ভুলণ্ঠিত। সরকার নারী নীতি নিয়ে জনগনকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে বলেন, গণভোট ছাড়া সংবিধান সংশোধন মানা হবে না। তিনি প্রতিবেশী দেশ ভারতের কঠোর সমালোচনা করেন বলেন, সরকারের নতজানু নীতির কারণে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের ফলে নদীগুলো শুকিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। দেশের বিশাল অংশ মরুভুমিতে পরিণত হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সরকারের ভারত প্রেম মেনে নেয়া হবে না’। তিনি ভারত সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘ বাংলাদেশের মাটির উপর দিয়ে গাড়ি চালাতে চান, আগে নদীগুলোকে জীবিত করতে হবে’। সাবেক এমপি হারুন স্থানীয় প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপি আমলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ৮ শ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। তিনি পদ্মার বাধ নির্মাণে অনিয়ম হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, ‘তীর সংরণের ব্লকগুলো এখনই খসে খসে পড়ছে। বাধের নির্মাণ কাজে অনিয়ম দূর্নীতি বন্ধ না হলে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’। তিনি স¤প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সফর প্রসঙ্গে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করে গেছেন তার আগের সরকারের আমলেই একনেকের সভায় পাশ হয়েছিল। নতুন করে তিনি কিছুই দিতে পারেন নি। সদর হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নিত করণ ও সাহেবের ঘাটের ব্রীজের নির্মাণ কাজ আগামী ২ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে না বলেও উল্লেখ করেন। কারণ তারা (সরকার) অর্থ দিতে পারবেনা। তিনি আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহবান জানান। সভায় সভাপতির বক্তব্যে শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ। দেশের মানুষকে বাঁচাতে হলে মধ্যবর্তী নির্বাচনের বিকল্প নেই’।  
অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন, নওগাঁর সাবেক এমপি ডাঃ সালেক চৌধুরী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মেয়র মাওলানা আব্দুল মতিন, শিবগঞ্জ পৌর মেয়র শামীম কবির হেলিম, ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান বাবর আলী বিশ্বাস, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক তসিকুল ইসলাম তসি, শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আশরাফুল আলম রশিদ, জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক সাদিউল হক রঞ্জু প্রমুখ।
মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জনসভার আয়োজন হলেও এটি ছিল দীর্ঘদিনের বিরোধ মিটিয়ে এক কাতারে আসা হারুন গ্র“প ও শাহজাহান গ্র“পের সমন্বয়ে বিশাল আয়োজন।

3 comments :

  • MobilePlaza and Computer says:
    ১০ মে, ২০১১ এ ১০:২৩ AM

    onekdin por holeo 2 group ek houate amra sobay khusi

  • Abul Kashem says:
    ১০ মে, ২০১১ এ ৯:০২ PM

    মামলা করার জন্য ক্ষমতায় আসা কি খুব জরুরী? জিয়া হত্যাকান্ডে হকুমের আসামি হিসাবে শেখ হাসিনার নামে মামলা করবে সে তো আনন্দের সংবাদ! তাহলে দেরি কেনো? ঐ মামলাটা কেনো এখনি নয়? সমগ্র জাতী ও জানতে চায়-জিয়া হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত!! অনেক দেরিতে হলেও বি এন পি;র অন্তত একজন এম পি জয়া হত্যার বিচার করবেন এবং সে জন্য মামলা করবেন শুনে শান্তি পেলাম। তবে মনে প্রশ্ন জাগছে-ম্যাডাম পাপিয়া কি পারবেন উকিল হিসাবে উনার ম্যাডাম বেগম খালেদা জিয়াকে রাজী করিয়ে আদালতে একটা মামলা রুজু করতে??

  • নামহীন says:
    ১০ মে, ২০১১ এ ৯:০৯ PM

    জানেন তো বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার করতে যে দেশে বিচারক বিব্রত হয়, বছরের পর বছর বিচারক নিয়োগ হয়নি, সে দেশে ক্ষমতা ছাড়া কিভাবে নিজ দলের নেতার হত্যার বিচার হয়, তাই তারা ক্ষমতার কথা বলছে। তাছাড়া ক্ষমতায় থাকলে সাক্ষী পাওয়া যায়, মামলার রায়ও কাংখিত মতই হয়, এখন তো এসব দেখতে পারছে সবাই।

Flag Counter
পাঠকের সবধরনের মত তুলে ধরতে চাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ । যে কোন বিষয় নিয়ে আপনিও লিখুন আর পাঠিয়ে দিন আমাদের কাছে. সাথে আপনার যোগাযোগের ঠিকানা ,আপনার একটি ছবি পাঠাতে ভুলবেন না।আপনার লেখা বা ছবি আমাদের ইমেল করুন chapainawabganjnews@yahoo.com